আর্কাইভগল্প

গল্প : পেট : সাদিয়া সুলতানা

লোকটা এখন দুই হাত পিঠের দিকে টেনে কোমরের কাছাকাছি ঝুলিয়ে মাথাটা বকের মতো ঝুঁকিয়ে মেঝে দেখছে। হ্যাঁ বকই, একেবারে সাদা বকের মতো দেখাচ্ছে তাকে। যেন জলভরা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে ঝুঁকে ঝুঁকে মাছ শিকার করছে। চব্বিশ বাই চব্বিশ ইঞ্চি টাইলস বসানো মেঝেতে তেমন কোনও জুতসই শিকার না পেয়ে শিকারি এখন রান্নাঘরের দিকে যাচ্ছে। রান্নাঘরের সিংকের সামনে দাঁড়ানো মাত্র তার নতমুখী মাথা সটান হয়ে যায়। তিনি দুই হাত সামনে এনে উৎফুল্ল ভঙ্গিতে বলেন, ‘এই তো সিংকটার বারোটা বাজিয়েছেন। দেখেছেন কলের কাছটা কেমন কালো হয়ে গেছে। এমন তো ছিল না।’ বলে দুই হাত ফের পেছনে চালান করে কণ্ঠস্বর খানিকটা জোরালো করেন তিনি, ‘তাহলে মাস্টারবেডের বেসিনের গ্লাস সেলফটা, পর্দার একটা স্ট্যান্ড আর এই সিংক সব মিলিয়ে কত টাকা হলো হিসাব করতে পারেন ?’

তুশান ইমরুল হাসানের কথার উত্তর দেয় না। সে বুঝতে পারছে না শব্দটা কি আসলেই লোকটা মাস্টারবেড উচ্চারণ করেছে কিনা। মাস্টারবেড শব্দের সমোচ্চারিত একটা শব্দ তার মাথার ভেতরে ঘুরপাক খাচ্ছে তো খাচ্ছেই, ইমরুল হাসানের কথার উত্তর দিতে পারছে না। তিনি অবশ্য উত্তরের অপেক্ষাও করেন না। পাঞ্জাবির ঝোলা পকেট থেকে কমলা রঙের একটা নোটবুক বের করে তাতে ক্ষতিপূরণের অংক হিসাব করতে থাকেন।

তুশানকে নীরব দেখে ক্ষেপে ওঠে রুমা।

‘কী কিছু বলছো না যে ? বাড়াবাড়ির তো একটা সীমা আছে! ব্যবহার করলে জিনিস নষ্ট হবে তো না কী! আট বছর এই বাসায় থাকার পর এমন লিস্ট করে ক্ষতিপূরণ দাবি করছে, এত ছোটলোক! এসব দেখেও একটা কথাও বলবে না তুমি!’

তুশান এমনিতে শান্ত স্বভাবের। রুমার মতো সামান্য কিছু নিয়ে হৈহৈ করার অভ্যাস ওর নেই। এই বিষয়টা অবশ্য সামান্য নয়, রুমার প্রণোদনায় তাই হয়তো ও কিছু একটা বলার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু তুশান কোনও প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগেই কোথা থেকে যেন মিগেল চলে এসে ইমরুল হাসানের পাঞ্জাবির কোণ খামচে ধরে, আর দশাসই লোকটা প্রায় ছিটকে ফুট তিনেক দূরে একেবারে দরজার বাইরে চলে যায়। সেই সুযোগে রুমা দড়াম করে দরজা বন্ধ করে দেয়। বাইরে থেকে উঁচু স্বর ভেসে আসে, ‘কেউ কুত্তা বিলাই পালে জানলে বাসাই আর দেখাব না। ফাজিল লোক সব। আমার বাসাটারে চিড়িয়াখানা বানায় ছাড়ছে!’

রুমার মুখে এবার হাসি ফোটে, ‘একদম ঠিক করেছিল মিগেল। আজ দুষ্টামি করার জন্য তোকে কিচ্ছুটি করব না, আয় আয়…আমার নুন্টু মুন্টু জানটু বেইবি।’ মায়ের উচ্ছ্বসিত স্বর শুনে পাশের ঘর থেকে রুশান চলে আসে।

‘মা, মিগেল নিশ্চয়ই বাড়িওয়ালাকে একেবারে শিক্ষা দিয়ে দিয়েছে! সাবাস মিগেল, আয় আয় তোকে আদর করে দিই।’

লোমশ দেহটা আহ্লাদে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে মিগেল রুশানের কোলে এসে বসে। তাই দেখে ঘরের পূর্বদিকের মেঝেতে লিটার বক্সের ওপরে বসা হ্যাপি নড়েচড়ে ওঠে। ওর আদরে ভাগ বসাচ্ছে কেউ, বেশিক্ষণ সহ্য করা সম্ভব হয় না। হ্যাপি টুপটুপে দেহে দুলে দুলে এসে সোফায় বসা রুশানের শরীর ঘেঁষে বসে। রুশান ঝুঁকে পড়ে হ্যাপির কপালে ঠোঁটে আদর করে।

‘দেখেছো মা কী জেলাস ও! মিগেলকে আদর করতে দিবে না।’

দুই কান ছড়িয়ে আদর নিতে নিতে হ্যাপি ‘মাও’ ‘মাও’ করে। তুশান হাসে।

‘ছোটবেলায় তুইও অমন করতি। তমাকে আদর করলে এমন করে এসে কোল দখল করতি।’

তুশানের মুখে এতক্ষণে কথা ফুটতে দেখে রুমা ভ্রƒ কুঁচকে তাকায়।

‘বাড়িওয়ালার সামনে তো একটা কথাও বললে না। লোকটা এত ছোটলোকি করে গেল। দুপুরেও ছেলেকে পাঠিয়েছিল, বলে কিনা আমরা নাকি রান্নাঘর থেকে কী খুলে নিচ্ছি, ওরা শব্দ পাচ্ছে, তাই দেখতে এসেছে। আজ বাদে কাল বাসা ছেড়ে দেব, মানুষের এই ব্যবহারও কিনা দেখতে হলো। আর যদি কোনওদিন ভাড়া থেকেছি কোথাও। জন্মের শিক্ষা হয়ে গেছে।’

এগারো বছরের রুশান মায়ের ভুলটা ধরিয়ে দেয়।

‘মা, এবার তো নিজেদের ফ্লাটে উঠছি আমরা। আর টেনশন কী! কোনও বাড়িওয়ালাই তুলতুলি, মিগেল আর হ্যাপিকে দেখে বিরক্ত হবে না। বাসা ছাড়তেও বলবে না।’

নিজের নাম শুনে তুলতুলে তুলতুলি রাউন্ড বেডের ভেতর থেকে মাথা বের করে তার উপস্থিতি জানান দেয়, ‘মিয়াওও মিয়াওও।’ তুলতুলি একটু আরামপ্রিয়। জিনিসপত্র প্যাকিংয়ের ঝুটঝামেলার ভেতরেও সে নিজের ঘুম ছাড় দিতে রাজি না। তাই দ্রুত নরম নরম বেডের ভেতরে নিজেকে ঢুকিয়ে ফেলে। রুশান এগিয়ে গিয়ে তুলতুলির ঘাড়ে গলায় আঙুল বুলিয়ে দেয়। চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর ভঙ্গি করে আহ্লাদী তুলতুলি।

‘আর বলবে কী! মা-ই তো এখন বাড়িওয়ালা।’

সবার কথোপকথন শুনে পাশের ঘর থেকে তমা চলে এসেছে। অগোছালো বাসায় কিছুই খুঁজে না পেয়ে কদিন ধরে ও মহাবিরক্ত। গতকাল রাতে খাট খুলে ফেলা হয়েছে। মেঝেতে পাতা ম্যাট্রেসে শুয়ে কিছুতেই ওর ঘুম আসছিল না। মাঝরাতে উঠে ফ্রিজে হাত দিয়ে দেখে, ফ্রিজও বন্ধ, কোনও খাবার নেই। এই মুহূর্তে ও ব্রাশ খুঁজে পাচ্ছে না। তমা জানে এমনিতেই মায়ের গোছানোর বাতিক, এখন বাসা পাল্টানোর সুযোগে সব গুছিয়ে গুছিয়ে ওদের অস্থির করে ফেলেছে, নিজেও হয়রান হয়ে আছে।

মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে টিনেজার তমা মুখ চোখ চোখা করে বলে, ‘মা একটাই রিকোয়েস্ট তুমি ঐ ফ্রিক লোকটার মতো বাড়িওয়ালা হয়ো না। মনে নেই, হ্যাপি হিটে আসার পর যখন ওদের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল তখন ওরা কী করেছিল ?’

রুমার মনে নেই আবার! হ্যাপিকে তাড়া করে একেবারে ছয় তলা থেকে নামিয়েছিল অভদ্র লোকটা। ভয়ে জবুথবু হ্যাপিকে রাতভর খুঁজে পায়নি ওরা। আরেকবার বাড়িওয়ালার ছেলেটা তুলতুলিকে জুতার বাকশের ভেতরে আটকে রেখেছিল, বলে কিনা তুলতুলি ওর খাটে পিসু করে দিয়েছে। একেবারে ডাহা মিথ্যে কথা। ওরা তিনজনই ওয়েল ট্রেন্ড আপ। প্রয়োজন হলে সোজা রুমার টয়লেটে চলে যায়। এখন অবশ্য লিটার বক্সে বসার অভ্যাস হয়েছে ওদের।

নতুন বাসায় মিগেল, তুলতুলি আর হ্যাপির জন্য আলাদা করে কমফোর্ট জোন তৈরি করেছে রুমা। একটা ঘরই আলাদা করে বরাদ্দ রেখেছে। এখানেও গেস্ট রুমটা ওদের জন্য আলাদা করা ছিল। যদিও কখনওই ঘরে বন্দি থাকতে রাজি না ওরা। প্রতি রাতে নিজেদের বিছানায় ঢুকলেও রাত বাড়লে ঠিকই ওদের চারজনের কাঁথার ভেতরে ঢুকে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকে।

রুশান হ্যাপিকে আদর করতে করতে বলে, ‘হ্যাপিটা না একেবারে ফিলিস্তিনি আর মিগেল ইসরায়েলি। আর তুলতুলি হলো প্রিন্সেস।’

‘কী এক্সামপল রে!’ ভাইয়ের মাথায় চাটি মেরে তমা বাথরুমে ঢুকে যায়।

দুদিন খুব ব্যস্ততায় কাটে। ডেভেলপাররা ফ্ল্যাট হ্যান্ডওভার প্রোগ্রাম করে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতেই ওরা আর দেরি করেনি, সাত তলার জি টু ফ্ল্যাটে এসে উঠেছে। ভবনের আলিশান গেটে টু-লেট লেখা সাইনবোর্ড ঝুলছে এখন। টুকটুক করে বাসা গোছাতে গোছাতে তুশান আর রুমাকে দিনভর সম্ভাব্য ভাড়াটিয়াদের ফোন রিসিভ করতে হচ্ছে।

টু-লেট সাইনবোর্ডে তুশানের ফোন নম্বর দেওয়া থাকলেও অধিকাংশ কল রুমাই রিসিভ করছে। জেনে নিচ্ছে বাড়ির কর্তা বা কর্ত্রী কী করেন, সদস্যসংখ্যা কজন ইত্যাদি ইত্যাদি। পৈতৃক ওয়ারিশসূত্রে এই ভবনে তিনটা ফ্ল্যাট পেয়েছে রুমা। একটায় নিজেরা উঠেছে, আর দুটো ভাড়া দিবে বলে মনস্থ করেছে। ব্যবসায়ী তুশানকে বন্ধুবান্ধব-আত্মীয় পরিজনরা বউয়ের ফ্লাটে ওঠা নিয়ে মাঝেমধ্যে খোঁচা মেরে কথা বলার চেষ্টা করেছে। তুশান গায়ে মাখেনি। বিয়ের আঠারো বছর পর নিজের আর বউয়ের বলে আলাদা করে কিছু নেই আর। আর তুশান জানে রুমা অমন মেয়েই না, নিজের সম্পত্তি বলে তুশানকে কটুকথা শোনাবে। বরং ডেভেলপাররা কাজ শুরু করার পর থেকে এই চার বছরে একবারের জন্যও রুমা ‘আমার ফ্ল্যাট’ বলে কিছু উচ্চারণ করেনি। তুশানেরও তাই ‘আমাদের ফ্ল্যাট’ বলতে কখনও জিভে জড়তা লাগেনি।

ঢাউস একটা কার্টন থেকে কাচের জিনিসপত্র বের করতে করতে তুশান বলে, ‘অ্যাই শুনছো, সেই ভদ্রলোক কিন্তু রাতে কনফার্ম করবে বলেছে। হ্যাঁ করে দিই কী বলো ? ভালোই তো মনে হচ্ছে ফ্যামিলিটা। ছোট পরিবার। ঝামেলা নেই কোনও।’

‘হ্যাঁ। কিন্তু পাঁচ তলার জন্য তো তেমন কেউ ফোন করছে না।’

ওদের তিন তলার ফ্ল্যাটটা সকালে এক দম্পতি কনফার্ম করেছে, পাঁচ তলারটা এখনও কাউকে সেভাবে দেখানো হয়নি। যদিও ভাড়া নিয়ে কথা বলতে রোজই ফোন করছে কেউ না কেউ। বাড়িওয়ালার মতো ভাড়াটিয়াও ইন্টারভিউ নিচ্ছে। লোকজনের কথা বলার কায়দা শুনে মাঝেমধ্যেই বিরক্ত হচ্ছে রুমা। সবার এক কথা, ভাড়াটা একটু বেশি। বেশি হবে না! এমন একটা জায়গায় একেবারে নতুন একটা বাসা! পনের বছর ঢাকা শহরে ভাড়াটিয়া হিসেবে থেকে নিজেরা বাড়িওয়ালা হিসেবে উদার থাকবে বলে পণ করেছে। রুমা আর তুশান তাই ভাড়ার ফ্ল্যাটের ফিটিংস লাইট থেকে শুরু করে রান্নাঘরের ইন্টেরিয়র কোনও কিছুতেই পয়সা খরচ করতে কার্পণ্য করেনি। শুধু একটাই চাওয়া ওদের, শিক্ষিত আর মার্জিত একটা পরিবার এসে ওদের প্রতিবেশী হোক।

নিজেরা বাসা নিয়ে তো আর কম কষ্ট করেনি। তুলতুলি, মিগেল আর হ্যাপির আগে ওদের পরিবারের প্রিয় সদস্য ছিল লিয়া। লিয়া একা ছিল। তবু ওর কথা শুনলেই বাড়িওয়ালারা উসখুস করত। প্রথমে আগ্রহ নিয়ে বাসা দেখালেও পরে ফোন করে না করে দিত। এই বাড়িতে ওঠার সময়ে কোনও পেট ছিল না ওদের। আগের বাসা থেকে হঠাৎ একদিন লিয়া হারিয়ে গিয়েছিল। রুমার সন্দেহ, বাড়িওয়ালাই দারোয়ান দিয়ে লিয়াকে সরিয়ে দিয়েছে। পরে লিয়ার শোক ভুলতে রাস্তা থেকে মিগেলকে তুলে এনেছিল রুমা। আরেকদিন গ্যারেজের ভেতরে পেয়েছিল নাজুক দেহের হ্যাপিকে। আর তুলতুলিকে বন্ধুর কাছ থেকে এনেছিল রুশান। বাড়িওয়ালা ওদের উপস্থিতি জানতে পেরে দফায় দফায় বাসা ছাড়ার মৌখিক নোটিশ দিয়েছে। আজ ছাড়ছি, কাল ছাড়ছি করে আট বছর ঐ বাসায় থেকেছে ওরা। যাক এতদিনে এসব ঝামেলা শেষ হলো। হাঁফ ছাড়ে রুমা। এখন নিজেরাই বাসা ভাড়া দিতে পারবে। মনে হচ্ছে মাস শুরুর আগেই দুটো ফ্ল্যাটই ভাড়া হয়ে যাবে। ডেভেলপার ওদের প্রজেক্ট হাতে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই গলির রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তার উল্টাদিকে রাতারাতি নয় তলা একটা হাইস্কুলও নির্মিত হয়েছে। বাচ্চাদের স্কুলের জন্য অনেক অভিভাবকই এখন এই এলাকায় বাসা খুঁজছে। সকালেই এক দম্পতি নিশ্চয়তা দিয়েছে তিন তলার জন্য রাতেই অ্যাডভান্স করে ফেলবে।

সেই ভদ্রলোকই আবার ফোন করলেন কিনা, তুশান রাইস কুকারটা টেবিলে তুলে রেখে ফোন রিসিভ করে।

‘জি ভাই। না, পাঁচ তলায়। জি। কমন স্পেসসহ বারোশ স্কয়ার ফিট। আপাতত ভাড়া সতের, আর ইউটিলিটি চার্জ তিন হাজার।’

‘খালি তুমিই বলছো কেন, শোনো কী করে সে।’

‘আচ্ছা, আচ্ছা, বাহ। আমরা এমন পরিবারই খুঁজছি, চাকরিজীবী। ওহ, পাখি আছে! বেশ। দুই ডজন! আচ্ছা, দেখে যান তবে বাসা। আমি বাসাতেই আছি। আধঘণ্টার মধ্যে এলেই পাবেন।’

‘কী বলছো! পাখি পুষবে! একটা দুটো পাখি থাকবে সে এক কথা। অমন ডজন ডজন পাখি নিয়ে বাবা আমার বাসায় কাউকে ভাড়া নিতে দিব না আমি। পাখির মল, খাবারে বিচ্ছিরি দুর্গন্ধ হবে। না করে দাও।’

বলেই রুমা তুশানের হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে নেয়। তারপর ওপাশে অপেক্ষারত কাউকে কাটা কাটা স্বরে বলে, ‘না ভাই, পাখি নিয়ে এই বাসায় ওঠা যাবে না। আমরা খুব ছিমছাম পরিচ্ছন্ন একটা ভাড়াটিয়া খুঁজছি।’

কোথা থেকে মিগেল এসে রুমার কোলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, রুমা ওকে দুহাতে সামান্য কচলে দিতে দিতে বলে, ‘ও আমার…নুন্টু মুন্টু জান্টু বেইবি…’

সচিত্রকরণ : রজত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button