আর্কাইভসম্পাদকীয়

সম্পাদকীয় : গল্পে গল্পে মনের আঁধার দূর করার আলো

দশম বর্ষ   দশম সংখ্যা   অক্টোবর ২০২৩

প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা উপহার দিতে পারছি গল্পসংখ্যা। প্রচ্ছদ রচনার ১১টি গল্পের সঙ্গে থাকছে আত্মহত্যাবিরোধী বিশেষ তিনটি গল্প। বিশ্বসাহিত্যের পাঁচটি সেরা গল্পের বাংলা অনুবাদ করেছেন বিভিন্ন দেশে সাহিত্যচর্চা করছেন এমন খ্যাতিমান অনুবাদকগণ। আরও থাকছে সেরা বাংলা সাহিত্যের ইংরেজি অনুবাদে তিনটি গল্প।

মোট ২২টি গল্প পাঠে ভিন্ন স্বাদ এবং অন্যরকম আলোর সন্ধান পাবেন অনুসন্ধিৎসু পাঠক, লেখক। নিশ্চিত বিশ্বাস আমাদের। আর এই আয়োজনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন ভারত এবং বাংলাদেশের এ সময়ের সেরা কথাসাহিত্যিকগণ। আছেন বিশ্বসাহিত্যের দিকপালরাও।

বিশ্বে ব্যাপকভাবে বেড়ে যাচ্ছে আত্মহত্যার হার। বুকে কাঁপন জাগানো খবর হলো এ পথে এগিয়ে আছে তরুণ-প্রজন্ম। নানা কারণে তাদের মনোজগতে ভাঙন তৈরি হচ্ছে। যে কোনও বিষয়ে ব্যর্থ হলে কিংবা জীবনযন্ত্রণার ঘা খেয়ে খেয়ে তীব্র মনোদহন থেকে সুইসাইডাল নোট রেখে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার পথে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। এই নির্মম পরিণতি ঠেকানো বা আত্মহত্যাপ্রতিরোধ কেবল মনোচিকিৎসক, মনোবিদ, সমাজবিদ কিংবা পরিবারের একক দায়িত্ব নয়। একই সঙ্গে এই দায়িত্ব সাহিত্যিকদেরও কাঁধে তুলে নিতে হবে। কাব্যে কিংবা কথাসাহিত্যে তরুণ-প্রজন্মের মনোজগতের পরিবর্তন ঘটাতে সৃষ্টিশীল আখ্যানের মধ্য থেকে চরিত্র নির্মাণ করে আত্মহত্যাপ্রতিরোধী আত্মবিশ্বাসী-সত্তা জাগিয়ে তোলা সম্ভব। নৈরাশ্যের অতল আঁধার থেকে তাদের তুলে আনার প্রণোদনা জাগাতে হবে আলোকিত চরিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে, উপদেশ দিয়ে নয়। সৃষ্টিশীল চরিত্র তাদের অন্তরকে আলোকিত করে তুলবে, এমন সাহিত্যই চাই।

তরুণদের মনোজগতে অর্থবহ করে তুলতে হবে সেই প্রবাদ : ‘জীবন পুষ্পশয্যা নয়’। জীবনে ব্যর্থতা আসবে, হতাশা আসবে। সবকিছু মোকাবিলা করে মাথা উঁচিয়ে চলতে হবে, নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। এই আশা থেকে আত্মহত্যাপ্রতিরোধী গল্প চেয়েছিলাম ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের তিন খ্যাতিমান গল্পকার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অসাধারণ তিনটি গল্প উপহার দিয়েছেন। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। কবি-কথাসাহিত্যিকদের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে, গুরুত্ব দিতে হবে—এ  আহ্বান জানাচ্ছি শব্দঘর-এর পক্ষ থেকে। 

সীমাবদ্ধতার কারণে আরও বেশি বেশি আত্মহত্যাবিরোধী কবিতা এবং গল্প ছাপানো গেল না কিন্তু ভবিষ্যতে এই ধরনের সাহিত্যকে শব্দঘর অগ্রাধিকার দেবে।

যথারীতি এ সংখ্যার ভিন্ন রকম প্রচ্ছদটি উপহার দিয়েছেন চিত্রকর ও কথাশিল্পী ধ্রুব এষ। শেষ প্রচ্ছদে আছেন কথাসাহিত্যিক শাহীন আখতার, মামুন হুসাইন ও আনিসুল হক। অলংকরণে অংশ নিয়েছেন রজত, শতাব্দী জাহিদ ও রাজীব দত্ত। নান্দনিকভাবে শব্দঘরকে পাঠকের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁদের প্রতি ভালোবাসা জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই। বিজ্ঞাপনদাতাদের আহ্বান জানাই সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে শব্দঘর-এর পাশে দাঁড়ানোর জন্য।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button