আর্কাইভভ্রমণ গদ্য

অধরাকে ছুঁতে বান্দরবান : খান মাহবুব

ভ্রমণ

অধরাকে ধরতে গিয়ে মানুষ প্রাণান্তকর চেষ্টা চালায় জীবনভর। প্রেয়সী থেকে প্রকৃতি অনেক কিছুই একজীবনে অধরা থেকে যায় মানুষের কাছে। কিন্তু মন তো চায় প্রকৃতির সীমাহীন দুয়ারে নিজেকে সঁপে দিয়ে বিরামহীন বসে থাকতে। এজন্যই যুগ-যুগান্তরে মানুষ ভ্রমণ অন্বেষী। বর্তমান ব্যস্ত জীবনে ভ্রমণের ফুরসত বের করা মুশকিল। তবু স্বর্গের সুখ এই বসুন্ধরায় ধরতে, ভ্রমণের সুযোগ করতে আকুতি থাকে ভ্রমণ পিপাসুদের মনোভুবনে।

বাংলাদেশে ভ্রমণের সুযোগ কম―ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের এই দেশে শুধু মানুষ আর মানুষ। প্রকৃতির অনুষঙ্গগুলো মানুষের চাপে আশপাশ করছে। প্রতিদিন ক্ষয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির উপকরণগুলো। এর মধ্যেই খুঁজে নিতে হয় আনন্দ। বাংলার দার্জিলিং খ্যাত বান্দরবান পাহার-নদী, ঝরনা, জলপ্রপাত ইত্যাদি নিয়ে হাতছানি দেয় পর্যটকদের। সেই হাতছানিতেই গা ঝাড়া দিয়ে বেরিয়ে পড়ি পরিবার নিয়ে আশ্বিনের এক সকালে। ঢাকা থেকে বিমানে ভূমি থেকে ১৫ হাজার ফুট উঁচু দিয়ে উড়ে চট্টগ্রাম। অতঃপর জিপে পতেঙ্গা বিচের মেরিন ড্রাইভের নয়নাভিরাম নতুন রাস্তা ধরে বান্দরবানের পথে।

চট্টগ্রাম শহরে পাহাড়ের গা চিড়ে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন রাস্তা। এখানে এলে একটু বিদেশ বিদেশ মনে হয়। গাড়ি প্রায় দুঘণ্টা চলার পর পাহাড়ের সারি দেখে বুঝতে অসুবিধা হলো না যে আমরা বান্দরবান শহরের কাছাকাছি। অতঃপর রেস্ট হাউজের বিছানায় গা এলিয়ে রাতের বিশ্রাম।

বান্দরবানে মেঘলা, নীলাচল, চিম্বুক নীলগিরি পর্যটকদের জন্য কমন স্পট। কিন্তু অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে যেতে হবে গহিনে অর্থাৎ নীলগিরি পার হয়ে থানচির দিকে। নীলগিরি পেরিয়ে থানচি উপজেলার দিকে ১০ কিমি এগুলেই বড় পাহাড় সারি ধরে ধরে সাজানো পাহাড়মালা দেখতে অপরূপ। ভাগ্য সহায় ছিল বলে ভোরের যাত্রী হিসেবে আশ্বিনের হালকা কুয়াশা দেখার সুযোগ মিলল। কুয়াশাগুলো কুণ্ডলী পাকিয়ে আমাদের গাড়ির দিকে আসছিল আবার মিলিয়ে যাচ্ছিল। গাড়ির পিনপতন নীরবতায় আমরা মেঘের খেলা দেখছিলাম। দূরের পাহাড়গুলো তখনও পেঁজা মেঘে ঢাকা। ভোরের সূর্য একটু রোদ্দুর ছড়িয়ে ধবল মেঘমালাকে যেন গহনা পড়িয়ে রেখেছিল।

সূর্যের যতই তেজ দাপাচ্ছিল দূরের পাহাড় দৃশ্যমান হচ্ছিল। এসব পাহাড়কে জীবননগরের পাহাড় বলে। জিপ গাড়ি রাস্তার চক্কর ঘুরতে ঘুরতে ৬ কিমি উঁচুতে চূড়ায় চলে যায়। চূড়া থেকে দূরের আরাকানের কালো কালো পাহাড় আরও অপরূপ লাগে। গাড়ি আবার ঘুরতে ঘুরতে নিচে নামে। প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লেগেছিল বান্দরবান সদর হতে ৯৬ কিমি দূরের থানচি পৌঁছুতে। এত ছোট থানা শহর আমি দেখিনি। বিদ্যুৎ এসেছে কিছুদিন মাত্র। গোধূলিবেলায় সাঙ্গু নদীর কূলে ঝোলা চা শপে চা খেতে খেতে পাহাড়ি নদী সাঙ্গুর প্রতাপ দেখছিলাম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের ভ্রমণ টার্গেট স্পট রেমাক্রি ও নাফাখুমের দুর্গমতায় বর্ণনা দিল। দুর্গম যতই হোক আমার মনপবনের নৌকার পালে হাওয়া লেগে গেছে। মন বলছে কীসের আমার বাড়িঘর মন চলেছে সুরেশ্বর।

ভোরে সরু নৌকায় যাত্রা, এতটাই সরু পাশাপাশি দুজন বসা যায় না। একজনের পিছু অপরজন বসতে হয়। এমন নৌকায় এলাহি ভরসায় চললাম। ইঞ্জিন চালিত নৌকা―দ্রুত চলে। চালক এই খরস্রোতা ঝিকঝাক পাহাড়ি নদী চলতে পটু। নৌকা যতই এগুচ্ছিল ততই জনকোলাহল থেকে বিযুক্ত হয়ে আমরা প্রকৃতির গহিনে প্রবেশ করছিলাম। সরু নদীর দুধারের পাহাড়গুলোর উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে পানির প্রবাহ বাড়ছিল। নদীর গভীরতা কম হলেও পাথরের কারণে পানি বাধা পেয়ে উঁচু-নিচু হয়ে প্রবল গতিতে ধাবমান হচ্ছিল। নৌকার মাঝি লাইফ জ্যাকেট পড়তে অনুরোধ করল। নৌকা পানির তোড়ে কাঁপছিল। কিছুটা ভয় থাকলেও পাহাড়ি খরস্রোতা নদীতে বোটিংয়ের অনাবিল আনন্দ সবকিছু দূরে ঠেলে দিয়েছিল। নদীর ভেতর বিশাল বিশাল পাথর যেন শত-সহস্র বছর ধরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় রাস্তা বন্ধ, কিন্তু না―কাছে গেলেই দেখা মিলছে পাথর ঘেঁষে সরু জলের প্রবাহ, চলার রাস্তা তৈরি করে রেখেছে।

আধ ঘণ্টা পেরুতেই অপার বিস্ময়ে চোখ আটকে গেল। বাংলাদেশে এখানেই প্রথম গ্রানাইট পাথরের উঁচু পাহাড় দেখলাম। উঁচু পাহাড়গুলো গাছ-গাছালি ঘিরে যেন আমাদের সরু নদীটা ছাতি ধরে রেখেছিল। নগরের কোলাহল নেই, গাড়ি নেই, নেটওয়ার্ক নেই, বিদ্যুতের তার নেই―শুধুই প্রকৃতি। বরং আমরাই বেমানান কয়েকজন পর্যটক। পাহাড়ের সাথে মিলে থাকা ম্রং পল্লির মানুষগুলোও আমাদের দিকে আগন্তুকের তীর্যক দৃষ্টিতে তাকাচ্ছিল।

রেমাক্রির কাছে আসতেই নদীর মোহনা বড় জায়গা দেওয়ায় স্রোত কমছিল কিন্তু পানির প্রবাহ বাড়ছিল। বুঝতে অসুবিধা হলো না ভালো কিছু ঘটতে যাচ্ছে। রেমাক্রি পৌঁছুতে আমার চোখ ছানাবড়া। বাংলাদেশে এত বড় জলপ্রপাত! পূর্ব-দক্ষিণ থেকে গহিন পাহাড় থেকে একটি জলধারা আওয়াজ নিয়ে এখানে এসে প্রায় ১৫০ ফুট প্রশস্ত ও ৪/৫ ফুট উচ্চতা থেকে পতন হয়ে প্রকৃতিসৃষ্ট জলপ্রপাত সৃষ্টি করেছে। 

পানির প্রবাহ এখানে বেশি এবং পানিতে পাহাড়ি মাটির মিশ্রণ বেশ থাকাতে রঙটাও ধূসর। রেমাক্রি জলপ্রপাত দেখে আমার স্ত্রী সাহানা আত্মহারা। তার বর্ণনায় বিদেশের জলপ্রপাত থেকে এখানকার সৌন্দর্য কোনওভাবেই খাটো করে দেখার নয়। পানিগুলো কেমন প্রকৃতির আদরমাখা ঈষৎ ঠাণ্ডা। পানির তোড়ে দাঁড়ানো দায়। অনেকেই দাঁড়াতে গিয়ে ধপাস…। তবে সাহস ও সাবধানতা অবলম্বন করে জলপ্রপাতের পাথরে বসতে পারলে আনন্দ আর আনন্দ। ঠাণ্ডা জল গা ধুয়ে দিচ্ছে আবার পাহাড়ের বাতাস আপনার মনকে দিচ্ছে রেশমি পরশ। স্বর্গের একচিলতে পরশ যেন এখানে। অনেকটা সময় রেমাক্রি থেকে আরও গভীর গহিনে নাফাখুমের পথে। বলে রাখা প্রয়োজন রেমাক্রির আলোবাতাসে কোনও মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। খাবারের ভালো ব্যবস্থা নেই তবে আগে থেকে বলে রাখলে রেমাক্রি জলপ্রপাতের পাশেই ‘শীলাগিরি গেস্ট হাউজে’ খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। রাত্রিও যাপন করা যায়। নাফাখুমের পথটা বেশ দুর্গম। রেমাক্রি হতে ৮/১০ কিমি হবে বৈকি। কিছুটা নৌকায় কিছুটা হেঁটে। তবে হাঁটার রাস্তা লোমহর্ষক। কখনও পাহাড়ি গিরিপথে গাছের শেকড়-বাকর ধরে বাদুর ঝোলা হয়ে পার হতে হয়। কিছুটা পথ হাঁটুজল পেরিয়ে যেতে হয়। আমাদের ভ্রমণের আগের দিন-রাতে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছিল বলে রাস্তা খুব পিচ্ছিল ছিল। খুব সাবধান, একটু অসাবধান হলেই পা পিছলে সোজা ২০/৩০ ফুট নিচুতে নদীতে। পুরোটা পথ নদী-মেঘ। পানির প্রবাহে এতটাই গতি যেন রীতিমতো শব্দ করে পানি বাহির হয়। কোথাও কোথাও পাথরের ধাক্কায় পানির শব্দে পাশের জনের কথা পর্যন্ত শোনা যায় না।

নাফাখুম বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃৎত্তম জলপ্রপাত, নাফাখুম মারমা শব্দ। নাফা অর্থ মাছ আর খুম অর্থ জলপ্রপাত। নাফাখুমের পাশের পাহাড়গুলো এতটাই উঁচু যে পাহাড় চূড়া মেঘে ঢেকে থাকে। যাবার পথ যত কষ্টদায়ক হোক না যখন সরু পাহাড়ি রাস্তার বাঁক ঘুরে দূরের নাফাখুম জলপ্রপাতের ধবল সাদা পানি ২০/২৫ ফুট উঁচু থেকে পড়তে দেখবেন মন ভরে যাবে। পানির তোড় এখানে প্রবল। জুলাই-অক্টোবর এখানে পানির প্রবাহ বেশ থাকে। পানি উঁচু থেকে পড়ে বাষ্প তৈরি হয়ে ঘূর্ণিপাক তৈরি করে। সরকার নাফাখুমের প্রবাহকে সুন্দরভাবে দেখতে ঝুলন্তব্রিজ তৈরি করে দিয়ে পর্যটকদের সুবিধা করেছে। তবে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিত করলে এই আনন্দ ভ্রমণ পিপাসুদের মনোভূমিতে পরিণত হবে।

নাফাখুমের ঝুলন্ত ব্রিজে বসে ৭০/৮০ ফুট দূরের পানির জলধারা অপরূপা। মনচায় এখানেই বসত গড়ি অনন্তকাল। নাফাখুমের পানির উৎস কোনও একক ধারায় সৃষ্টি নয়। দূর পাহাড়ের গিরি ঝরণার পানি এমনকি আরাকানের পাহাড়ের পানির সংযোগ আছে নাফাখুমের জলপ্রপাতের পানির।

এখানকার পরিবেশ এখনও প্রকৃতির শাসনে নিয়ন্ত্রিত। গুটি কয়েক পর্যটক ছাড়া যৎসামান্য পাহাড়িদের দেখা মেলে। জলপ্রপাত, পাহাড়, বন-বনানী সবমিলিয়ে এখানেই নিজেকে প্রকৃতিতে শপে দেওয়া যায়।

নাফাখুমের জলের ধারা সত্যই মুগ্ধকর। এত বিশাল ও বিপুলতার জলপ্রপাত বাংলাদেশে বিরল। এখানে আদিবাসীদের বাড়িতে স্বল্প টাকায় রাত্রিযাপন করা যায়। তবে থাকা-খাওয়া শহরে মানুষের জন্য আরামদায়ক নয়।

নাফাখুম থেকে পাহাড়ের ভ্রমণসঙ্গী গামছায় ঘাম মুছলিলাম কিন্তু মনে আনন্দ ছিল। আনন্দটা এতটাই প্রবলছিল যে আসার পথে হাতের লাঠিটার সাহায্য কমই নিতে হয়েছে ট্রেকিংয়ে।

নাফাখুমের দুর্গম এলাকা পেরিয়ে ভ্রমণপিপাসু আরও ৪০/৫০ কিমি ভেতরে ঢুকে ট্রেকিং করে। পাহাড়িদের বাড়িতে রাত্রিযাপন করে কয়েকদিন ধরে ট্রেকিং চলে। আরও গভীরে আরও আনন্দ। অজানারে জানার ও পাওয়ার আনন্দে বিভোর হওয়া যায়।

নাফাখুমের ফিরতি পথে মন আনচান করছিল আরও কিছুটা সময় নাফাখুমে যাপন করার জন্য। আমাদের এই ছোট দেশে এখনও প্রকৃতির এত অপার নিদর্শন ছড়িয়ে আছে জেনে মনটা আনন্দে ভরে উঠছিল। পাশাপাশি ভীষণ অভিমান হচ্ছিল এই ভেবে দেশের পর্যটন কর্পোরেশন করেটা কী? গ্রানাইট পাথর ঘেরা সর্পিল পাহাড়ি নদী অববাহিকায় এসব জলপ্রপাতকে কেন এখনও একটু যোগাযোগের সুবিধায় এনে জনসাধারণের দর্শনের উপযোগী করা হয়নি। সরকার আন্তরিক হলে অনায়াসে এ কাজটি করে অভ্যন্তরীণ পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটাত। আর মানুষ হয়তো বহু টাকা ব্যয় করে প্রতিবেশি দেশে ভ্রমণে যেতে এতটা আগ্রহী হতো না।

নাফাখুম থেকে ফিরতি পথে এবার চারপাশটা চোখ লাগিয়ে দেখতে শুরু করলাম। যাওয়ার পথে তো জলপ্রপাত দেখার আনন্দে শুধু ধেয়ে ছুটেছি। যা হোক খরস্রোতা পাহাড়ি নদীতে এত পাথর কী করে এল সে বিস্ময়ে সঠিক বক্তব্য পাওয়া মুশকিল। তবে অনুমেয় এই একসময় জলের ধারা অতীতে হয়তো প্রবল ও প্রভাবশালী ছিল। উজান থেকে পাথরগুলো জলের ধারার সাথেই নিম্নগামী হয়েছে। নাফাখুম সংলগ্ন পাহাড়গুলোতে প্রচুর কলা গাছ। স্থানীয়রা ডাকে ‘হাতিকলা’ বলে। এসব কলা নাকি মানুষের মুখে সুস্বাদু নয়। তবে হাতিদের জন্য উপকারের। একসময় এ এলাকায় প্রচুর হাতি ছিল―এখন কেবল স্মৃতিখাতায় এসব কথা। তবে ‘হাতিকলা’ গাছ কালের সাক্ষী হয়ে আজও বিদ্যমান। নাখাখুম হতে ফিরতি পালায় আবার রেমাক্রির নেচারাল ওয়াটার ফল্সে দ্বিতীয় দফায় গা ভেজানোর লোভ সামলাতে পারলাম না। থানচিতে ফিরছিলাম পড়ন্ত বিকেলে, শরীর ক্লান্ত, রোদের তেজটাও, ক্লান্ত নৌকা চলছিল এবার স্রোতের স্বপক্ষে। যাতায়াতের পথে পুলিশি চেক পোস্ট, ছবি তোলা পরিচয় পত্র দেখানোর হ্যাম্পা থাকলেও আমাদের পূর্বানুমতি ছিল বলে এসবে সময় ব্যয় করতে হয়নি। থানচি ফিরে সন্ধ্যা নামতেই চোখ জুড়ে রাজ্যের ঘুম। কোনরকম নাকেমুখে খেয়ে ধুমঘুম। পরদিন ভোরে থানচি থেকে সামান্য দূরে। ‘তমাতুঙ্গী’ পাহাড় থেকে অপার আগ্রহে দূর পানে দৃষ্টি মেললাম তাজিংডং ক্রেউকারা ডং ও ডিম পাহাড় দেখার জন্য কিন্তু বিধি বাম। কুয়াশার কারণে দেখা গেলো না। তবে ‘তমামুঙ্গী’ পাহাড় চূড়ায় দাঁড়িয়ে দূর পাহাড়ের গাঁ গেষে যে আঁকাবাঁকা পথ চলে গেছে দেখতে অপরূপ লাগে। এখানে পর্যটকদের জন্য টাওয়ার ও সুইমিংপুল নির্মিতব্য।

শুরুতেই বলেছিলাম বান্দরবান জেলায় এখনও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মায়াবী স্পট রয়েছে। প্রতিনিয়তই কিছু কিছু স্পট নতুন করে আলোচনায় আসছে। এতদিন হয়তো পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়নি। সম্প্রতি আলোচনায় আসা বান্দরবানের একটি পর্যটক স্পট দেবতাখুম।

বান্দরবান জেলা সদরের নিকটবর্তী উপজেলা বোয়াংছড়ি উপজেলায় দেবতাখুমের অবস্থান। দুপাশে গ্রানাইড পাহাড় শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে দেবতাখুমে মাঝে স্বচ্ছ জলের ধারা। পানির গভীরতা স্থানভেদে ৫০ ফুট পর্যন্ত। উঁচু পাহাড় এই জললগ্ন এলাকাকে শীতল ও শান্ত করে রাখে। এই মায়াবী স্থানে ভ্রমণের জন্য স্থানীয় গাইড আবশ্যক। গাইড ছাড়া এই স্থানের ভেদ-বৃত্তান্ত বোঝা দায়। তবে দর্শনার্থীর সাঁতার জানা জরুরি। বান্দরবান সদর থেকে ২০ কিমি দূরে পৌঁছতে হবে প্রথম শীলবাঁধা পাড়ায়। এই পাড়া বা মহল্লাটা দেবতাখুমের বেজক্যাম্প। পাহাড়ি ঝিরিপথ ধরে দেবতাখুমে হাঁটা যায় তবে স্থানীয়দের তৈরি বাঁশের ভেলায় যাওয়া যায় দেবতাখুমে। নাফাখুমের মতো দেবতাখুমেও মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। নেটওয়ার্কের বাইরে আপনিও চাইলে যাপন করতে পারেন নিজের মতো করে সময়কে।

 লেখক : প্রাবন্ধিক, ভ্রমণসাহিত্যিক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button