
স্বপ্নগুলো
ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি
আমাদের নদীগুলো চুরি হয়ে গেছে
যে বাড়িটি আমার ছিল
উঠান ও ভেতর বাড়ি যেন ধূ ধূ মাঠ
সেখানে পশুর ভিড় গাভিগুলো লাল আচ্ছাদনে
আরও লাল মানুষেরা গোমুত্র সন্ধানে
খুব ব্যস্ত লোল জিহ্বা নিয়ে
ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি
মৃদুলার বিয়ে হয়ে গেছে
আমিতো মৃদুলাকে কখনও দেখিনি
তবে সে স্বপ্নে কেন আমাকে জাগাল
ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি
আমার হৃদয় বলে কিছু নেই
ক্রুর তির হাতে নিয়ে জেগে উঠে দেখি
আমার বুকেই তির বিদ্ধ হয়ে আছে
ঘুম থেকে জেগে উঠে যে দৃশ্য চোখে চোখে ঘোরে
আসলে তা দৃশ্য নয় দৃশ্যের মতো
ঘুম থেকে জেগে নয়
ঘুমের ভেতরে স্বপ্ন
স্বপ্ন থেকে জেগে উঠে ফের স্বপ্ন দেখি
আমাদের স্বপ্নগুলো গ্রাস করে দানব-দেবতা
— —- —-
সম্পর্কনিচয়
এতই ঠুনকো!
কাচের পেয়ালাও হাত ফসকে পড়ে গেলে
কখনও ভাঙ্গে না
নির্বান্ধব হতে হতে
ভালোবাসা হাত থেকে পড়ে গেছে বলে
বিশ্বাসহীনতা খুব মাথা উঁচু করে
জনারণ্যে ঘোরে
পচন ধরেছে আজ শরীরে-সত্তায়
হে বন্ধু আমার
সত্য ও বিশ্বাস দূরে রেখে
সৃজন-কৌশল করে মিথ্যার বন্ধু হয়ে
অনূদিত হলে তুমি অন্যরূপে
এতই ঠুনকো আজ সম্পর্কনিচয়!
— — —
টুকরা কবিতা
১.
আমি বন্ধু তুমি শত্রু হলে
ঘৃণা শুধু ঘৃণ্য কথা বলে
২.
ছোড়া তির নদী তীরে এসে
বিদ্ধ করে ক্রুর ভালোবেসে
৩.
আত্মরতি করে হইচই
এসো ঘৃণা পরিশুদ্ধ হই
৪.
যে পথে আছি সে পথেই তো যাব
তুমি তাই নিজেকে নিয়েই ভাবো
৫.
কেটে গেলে ভয়
গালি শিল্প হয়
৬.
চারদিকে এত আলো এত আলো
অন্ধকার ততো জমকালো
— — —
আমি ও আমার
আমাদের ছেড়ে চলে গেছে মানব হৃদয়
‘আমি’ ও ‘আমার’গুলো গিলে খাচ্ছে সকল সুষমা
চারদিকে আমি শুধু আমি
বোধগুলো ক্রোধ হয়ে আমিতে বিভোর
আমাদের অবশিষ্ট কিছুই তো নেই
এখন ‘আমি’র অর্থ যত অকল্যাণ
এখন ‘আমার’ অর্থ যত অকল্যাণ
আমাদের সর্বনাশ হতে হতে
কিছু বাকি রয়ে গেছে
অশুভ সময় এসো সর্বনাশ মেখে খেয়ে
জীবনকে অবহেলা করি
চোখেরও ধর্ম আছে
চোখেরও ধর্ম আছে তবে তা লৌকিক নয়
অলৌকিকও নয়
চোখের ধর্ম শুধু চোখের মতোই
মানুষের বিশ্বাসগুলো
এই চোখ কখনও মানেনি
চোখের গভীরে চোখ খুঁজে ফেরে
অলোকসামান্য থেকে অলোকসুন্দর
খুঁজে ফেরে অসামান্য স্থিতি
এই চোখ তার ধর্মমতো
নির্নিমেষ লাবণ্য চঞ্চল…
— — —
সচিত্রকরণ : রজত