
আমরা দুজন
আমি জানি আমরা আবার বেড়াতে যাব
তুই আমাকে বলবি, কতদিন কোথাও যাই না
আমি তোকে নিয়ে যাব সুন্দর কোনও শহরে
কিংবা সমুদ্রের কিনারে
নতুবা পাহাড়ে
অথবা অরণ্যে
আমি জানি আমরা আবার দেখব প্রকৃতির বিস্ময়
এবং মানুষের সামর্থ্যের সৌন্দর্য
আমাদের পাশে হাসবে নারী ও শিশুরা
আমি জানি আমরা আবার এই পৃথিবীতে আসব
আমি হব সূর্যরশ্মি
আর তুই চন্দ্রকিরণ
শূন্যকে পূর্ণ করব আমরা দুজন

চলার পথ
বলার কিছু নেই তো আমার
চলার আছে পথ
কাছের স্বপ্ন দূরে দেখায়
দুরন্ত দ্বৈরথ
ষড়ঋতুজুড়ে রিপু
করে রাজত্ব
কনের বাড়ি বরপক্ষ
এনেছে তত্ত্ব
গান থেমেছে প্রাণ থেমেছে
পেয়েছি তথ্য
সবার আগে খুন হয়েছে
বেচারা সত্য
গলার কাঁটা নাছোড়বান্দা
বলার কিছু নেই
চলার পথে ছলাকলা
পা দুটো ফেলতেই

ঠগের মুল্লুক
উপবাসে রাত কাটে
কোরবানির হাটে চলে বেচাকেনা
তারিখে তারিখে বাড়ে চন্দ্রকলা
অথবা উল্টোটা
স্থায়ী ঠিকানার খোঁজে ছোটাছুটি করি
শহরে ব্যস্ততা
শহরতলিতে উদ্বেগ
খাসজমিতে গড়ি অস্থায়ী বাড়ি
পদে পদে বাধা
যেখানে যেতে চাই তার হদিস খুঁজে পাই না
সম্মুখযাত্রা ঘুরে যায় পেছনপানে
কে যেন টানে
ঠকাতে চাই না কাউকে
নিজে শুধু ঠকে যাই ঠগের মুল্লুকে

নাম
তোকে দেখার জন্য আমি বিকেল পাড়ি দিয়ে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম সন্ধের কিনারে
একা
তারপর রাত্রির নদী বয়ে গেল সময়ের সাগরে
ঘুমহীন লাল চোখ নিয়ে সকাল এসে দাঁড়াল দরজায়
আমি সারা দিনের সাদা পৃষ্ঠায়
প্রতীক্ষার কালো কালিতে লিখলাম একটা নাম
আকাশপাতাল বৃষ্টি এল দুপুরে

জীবনাঙ্ক
সোনার পালঙ্কে শুয়ে
রুপার খাটে পা রেখে
রুপাকে হীরের তুল্য মনে হতে পারে
কারও কারও
কিন্তু কাঁটার বিছানায় শুয়ে
নরম মাটিতে পা রেখে
কেউ কখনও ভাবে না
সে শিমুল তুলোর গদির আরাম পাচ্ছে পায়ে
জীবন অমনই এক সরল অঙ্ক
জীবন অমনই এক জটিল সমীকরণ

উৎসব
জেনেছি সত্যি জেনেছি মিথ্যে তবু
বুঝতে পারিনি বুদ্ধির কারচুপি
বিরূপ রাত্রি কম্বলে জবুথবু
চালচিত্রের বুজরুকি বহুরূপী
বাতাসে ছন্দ অন্ধকারের বুকে
তোর দুর্বহ যন্ত্রণা দুই মুখী
যদিও মৃত্যু আসছে গন্ধ শুঁকে
তোর প্রান্তরে খেলা করে আমি সুখী
তোর সত্তায় পাই আনন্দধারা
আমি তিনবেলা তাই করি কলরব
হৃদয়ে মাতাল তৃষ্ণা লাগামছাড়া
শরীরেই সব পার্থিব উৎসব

ভূত
শব্দদের নিয়ে খেলা করতে করতে
আমি আজ ভুলে গেছি
মানুষের নাম
পথঘাট
উঠোনের শেষ প্রান্তে আটচালা
আমাকে ডেকো না কেউ
অদ্ভুত জগতে আমি এক ভূত
———————-
সচিত্রকরণ : রজত