
অন্য কোনও উঠানের বুকে
আমি যখন
অন্য কোনও উঠানের বুকে
পড়ে থাকা শুকনা পাতার গায়ে
রৌদ্রস্নান দেখছি
তুমি তখনও
একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবিত গাছ
হাত ভর্তি পাতা
পা ভর্তি ফুল
বিনিয়োগ আর বন্দুকের নালায়
জেগে আছো বুঝি
বুঝি ঝরে পড়ে গেছে ঘুমরেণু
মাছির মস্তিষ্কের মতো সদা জাগরুক
রাষ্ট্রক্ষমতা
তোমার দখলে কিনা
সন্দেহ জাগে
বিনিয়োগ আর বন্দুকের নালায়
নেতানো সভাপতি
এসো
বিস্তীর্ণ আগর বাগান সেজেছে
তোমার অপেক্ষায়

অন্ধ। চোখে দেখি কী না
আমি অন্ধ। চোখে দেখি কী না
না দেখি না দেখি না দেখি না
আমার ডুমুরের ফুলে
পরাগায়ণ ঘটাবে মৌমাছি
নাকি জাদুবাস্তবতা
নাকি বিশ্বকবিতার থালা
তালপুকুরের কাঠের কৌটায়
তখনও জীবিত থাকবে বিষাক্ত ভ্রমর
বৈশি^ক আর্কাইভ বানাবে ভ্রƒণদল
একদিন জাদুঘরে ঠাঁই পাবে তারা
মৃত। বরফ।
প্রবালের অলিতে গলিতে বিস্তৃত গণিত
কাছেই
ছিল
আছেও বোধ হয়
অথচ কাছেই যাচ্ছি না
শব্দ-ছন্দ-আলোকচক্রে
পাথরের নেশায় আক্রান্ত জ্বর কাছেই
তথাপিও
কপালে নিচ্ছি না যাকে সে কি কোনও অভিঘাত
ক্রমাগত এগিয়ে আসছে কোণেও ধুমায়িত উন্মাদ
উন্মাতাল ফেনা
প্রবালের অলিতে গলিতে বিস্তৃত গণিত
নক্ষত্রের লেনাদেনা। নিতে পারছি না
কাছেই সমুদ্র। মায়াবি। রাক্ষসী সাগর
ভাবতে পারছি না

আরও কিছু বালি
কিছু না কিছু কুড়িয়ে আনছি প্রতিবার
যতবার তোমার কাছে যাচ্ছি
পরিচিত কয়েকটি ঝিনুক
শামুক নুড়ি পাথর
আরও কিছু বালি। বালিয়াড়ি। ঝড়
কয়েকটি ঢেউ আর আকাশ
যতদূর সম্ভব
কুড়িয়ে আনছি কত কিছু
অথচ কোনও কিছুতেই
কিছুতেই তোমাকে পেলাম না
নার্সিসাস
যখন তিনিও নার্সিসাস
যখন তিনিও তাঁর আর্শিতে রাখেন অবয়ব
তখন যদি অন্য কেউ
তাকে দেখে ফেলে
সেজন্য তিনি তা গোপন করেন না
বরঞ্চ একটি প্রজাপতির ডানা বানাতে বানাতে
মাতোয়ারা হন গোপন সোহবাতে
আর
স্বল্প সফর শেষ হওয়া মাত্রই
অসীমের পথে যাত্রা করেন তিনি…

স্বপ্নের অন্ধ সাজন
একদিন কোনও একটা নদীর পাড়ে
আমরা বসে-টসে থাকব
কুজনে দুজন
পুকুরও হতে পারে
আমাদের বিস্তারিত সুখ ও নিমীলিত গম
অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যতের
সমূহ সম্ভাবনা মিলে
একটা পাহাড়ও হতে পারে
যার পাথরে পাথর ঘষে
যৎকিঞ্চিৎ থিতু ও ক্লান্ত বানিয়ে
ভেতরটাকে মানিয়ে। শানিয়ে নিতে চেষ্টা করব
অথবা একদম ভোঁতা একটা করাতের দাঁত হয়ে
চাঁদের বুড়ির বুকে সুতো কাটব
এইবার বলো, স্বপ্নের অন্ধ সাজন পছন্দ হলো কী না

খেয়ালবশত একটা দেয়াল
খেয়ালবশত
একটা
দেয়ালের
গা বেয়ে
উঠতে শুরু করেছি
কোনও রকমের খাদ-খোড়ল তারকাটা ছাড়াই
সে আমায়
সহযোগিতা করছিল আর আমি
ওপরের দিকে যাত্রা শুরু করেছিলাম
আর আমি বর্তমান থেকে অতীত
আর ভবিষ্যতের দিকে
একই সঙ্গে যাত্রারম্ভ করতে থাকব বলে
পাথরের দেয়াল আমাকেও
পাথরের মানুষ বানাতে সক্ষম হয়েছিল

পিতলের জাঁতির মতন
এই তো দিন শুরু হয়ে যাবে
মানুষের হর্ন গাড়িদের কর্মব্যস্ততার সাথে সাথে
ক্ষীণ হতে থাকবে পাখিদের ডাকসুর
যাই আমি অলসতায় ডুব মারি
লোকসমাগমে যেতে হবে অচিরেই
খেই হারানো দড়িতে
যথেষ্ট বেঁধে
পিতলের জাঁতির মতন
চকচকে একটা জীবন বানাতে
মফিজুলের পানের বরজে ক্রমাগত ঢালতেই হবে
জল

পরীক্ষা
জীবনের তালপাতাজুড়ে পরীক্ষার ঘনঘটা। প্রশ্নের পদে পদে নিশিন্দা ফুলের মতন ফোটে বিষাদের নিম।
তাই দেখে দেখে অসীম আনন্দে গড়ায় নিমফুল। অভিধান খুলে বসে। দেখে খুব অস্পষ্ট খোঁড়ল।
দেখে জাঁতার ঘূর্ণনে ক্লান্ত আবডাল। দেখে পাণ্ডুলিপির পরতে পরতে মুছে ফেলার বিবিধ ব্যাকরণ।
নিদ্রামগ্ন বহুকাল।
তারপর তাদের যাত্রা শুরু হয় ডাক্তারের দরজায়। কবিরাজ।
মাওলানা। তারপর পুরোহিত।
আর তারা সমাধানের বদলে ব্যবধানের জয়গান গায়।
এদিকে প্রবল শীতের আগেও পিছু ছাড়তে চাইছে না আবহাওয়া।
টপ শট থেকে পরিপক্ক টক। বরইয়ের গাছের মতন চেহারা।
তুখোড় রসালো নাছোড় বৃষ্টি ও নিমফুল।
কারণ দর্শানোর নোটিশে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়…
আমার একটা উঠান দরকার। একটা সূর্য।
একটা চাঁদ। আর একটা বটগাছ।
নদীও দরকার। দরকার বসন্ত বাউরি পাখি।
কেঁচো। উজ্জ্বল খয়েরি তেলাপোকা।
কমিটির সম্মতিক্রমে বাতিল ঘোষিত হয় রোল। রেজিস্ট্রেশন নাম্বার।
বাতিল ঘোষিত হয় নিমফুল।
বাতিল হতে থাকে সর্বজনবিদিত আর্তনাদ।

অন্ধ আঙুল
দাঁত মাজব না। দুর্গন্ধের গোড়ায় জল ঢেলে ফোটাব নিমফুল।
থালাভর্তি কুপোকাত নিয়ে ফিরে যাবেন নগরের অন্ধ আঙুল
বন্ধ কমিশনারের চোখে ফুটবে কি পলাশের কুঁড়ি…
দাঁতের ফোকরে জমেছে জমজমাট চমৎকার। জীবনের বলাৎকারে উড়ে বেড়াবে প্রজা
পতিনিষ্ঠ কালো মার্বেল। ফোঁটা ফোঁটা বাদামি কষঝরা ব্যথিত তুরুল
কালো একা নিঃস্ব প্রজাপতি
দাঁত মাজব না। এমনকি ভালোবাসব না ভাত
ফ্রাইড রাইসের প্ল্যাটারে ব্যালে নৃত্য করবেন মার্ক জাকারবার্গ
এন্ড টু এন্ড সাবস্ক্রিপশনের বদৌলতে নেচে বেড়াবেন রাঙা পলেথিন নাঙ্গা পিঁপড়ের দল
পৃথিবীর দাঁতের সুগন্ধ নির্মাণে নতুন উদ্যমে নেমে পড়বেন বুনুয়েল-র
অ্যান আন্দালুসিয়ান ডগ…
————————
সচিত্রকরণ : নাজিব তারেক